বাংলা ভাষা

দক্ষিণ এশিয়ার বাঙালি নৃগোষ্ঠীর ভাষা

বাংলা ভাষা (বাঙলা, বাঙ্গলা, তথা বাঙ্গালা নামেও পরিচিত) একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, যা দক্ষিণ এশিয়ার বাঙালি জাতির প্রধান কথ্য ও লেখ্য ভাষা। মাতৃভাষীর সংখ্যায় বাংলা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের পঞ্চম[৮]মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনুসারে বাংলা বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা।[৯][১০] বাংলা সার্বভৌম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তথা সরকারি ভাষা[১১] এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরাআসামের বরাক উপত্যকার দাপ্তরিক ভাষাবঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রধান কথ্য ভাষা বাংলা। এছাড়া, ভারতের ঝাড়খণ্ড, বিহার, মেঘালয়, মিজোরাম, ওড়িশার মত রাজ্যগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী জনগণ রয়েছে। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, ভারতের মোট জনসংখ্যার ৮.০৩ শতাংশ মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে[১২] এবং হিন্দির পরেই বাংলা ভারতে সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা।[১৩][১৪] এছাড়াও মধ্য প্রাচ্য, আমেরিকাইউরোপে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী অভিবাসী রয়েছে।[১৫] সারা বিশ্বে সব মিলিয়ে ২৮.৫ কোটিরও অধিক লোক দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ব্যবহার করে।[১৬][১৭][১৮] বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতরণসঙ্গীত বাংলাতে রচিত এবং জাতীয় পর্যায়ের সকল কার্যক্রম বাংলাতে পরিচালিত হয়। ভারতের জাতীয় সঙ্গীতস্তোত্র বাংলাতে রচিত।

বাংলা
বাঙলা, বাঙ্গালা, বাঙ্গলা
বাংলা লিপিতে লেখা "বাংলা" শব্দ
উচ্চারণ/bɑːŋlɑː/
অঞ্চলবাংলাদেশ বাংলাদেশ,
ভারত ভারত (প্রধানত পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, ওড়িশা, মেঘালয়, ঝাড়খণ্ড এবং দক্ষিণ আসাম বরাক উপত্যকা ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা) এবং
নেপালনেপাল (মেচী অঞ্চল)[১]
জাতিবাঙালি জাতি
মাতৃভাষী
৩০০ মিলিয়ন (২০১১–২০২১)[২][৩]
দ্বিতীয় ভাষা: ৪০ মিলিয়ন[২]
পূর্বসূরী
উপভাষাবিস্তারিত দেখুন বাংলা উপভাষাসমূহে
সরকারি অবস্থা
সরকারি ভাষা
নিয়ন্ত্রক সংস্থাবাংলাদেশ বাংলা একাডেমি
ভারত পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি
ভাষা কোডসমূহ
আইএসও ৬৩৯-১bn
আইএসও ৬৩৯-২ben
আইএসও ৬৩৯-৩ben
গ্লোটোলগbeng1280[৭]
লিঙ্গুয়াস্ফেরা59-AAF-u
বিশ্বে বাংলা ভাষার ভৌগোলিক বিস্তার
  বাংলা ভাষার মর্যাদা যেখানে একমাত্র জাতীয় ও সরকারি ভাষা
  বাংলা ভাষার মর্যাদা যেখানে অনেকগুলি সরকারি ভাষার মধ্যে একটি
  বাংলাভাষী মানুষ বাস করেন (১,০০,০০০+)
  বাংলাভাষী মানুষ বাস করেন (১০,০০০+)
দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাভাষী অঞ্চল

বাংলা ভাষা বিকাশের ইতিহাস ১৩০০ বছর পুরনো। চর্যাপদ এ ভাষার আদি নিদর্শন। অষ্টম শতক থেকে বাংলায় রচিত সাহিত্যের বিশাল ভান্ডারের মধ্য দিয়ে অষ্টাদশ শতকের শেষে এসে বাংলা ভাষা তার বর্তমান রূপ পরিগ্রহণ করে। বাংলা ভাষার লিপি হলো বাংলা লিপিবাংলাদেশপশ্চিমবঙ্গে প্রচলিত বাংলা ভাষার মধ্যে শব্দগত ও উচ্চারণগত সামান্য পার্থক্য রয়েছে। বাংলার নবজাগরণেবাংলার সাংস্কৃতিক বিবিধতাকে এক সূত্রে গ্রন্থনে এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে তথা বাংলাদেশ গঠনে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

বাংলায় প্রায় ৭৫,০০০ পৃথক শব্দ রয়েছে, যার মধ্যে:

১৯৪৭ থেকে ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব বাংলায় সংগঠিত বাংলা ভাষা আন্দোলন এই ভাষার সাথে বাঙালি অস্তিত্বের যোগসূত্র স্থাপন করেছে। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদী ছাত্র ও আন্দোলনকারীরা সংখ্যাগরিষ্ঠের মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষাকরণের দাবিতে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেন। ১৯৮৭ সালের বাংলা ভাষা প্রচলন আইন বাংলাদেশের সকল রাষ্ট্রীয় কাজে বাংলার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।[২০] ১৯৫২ সালের ভাষা শহিদদের সংগ্রামের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারি দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।[২১][২২]

ইতিহাসসম্পাদনা

বাংলা ভাষার ইতিহাসকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয়:[২৩]

  1. প্রাচীন বাংলা (৯০০/১০০০-১৪০০ খ্রিষ্টাব্দ) — চর্যাপদ, ভক্তিমূলক গান এই সময়কার লিখিত নিদর্শন। এই সময় আমি, তুমি ইত্যাদি সর্বনাম এবং -ইলা, -ইবা, ইত্যাদি ক্রিয়াবিভক্তির আবির্ভাব ঘটে।
  2. মধ্য বাংলা (১৪০০-১৮০০ খ্রিষ্টাব্দ) — এ সময়কার গুরুত্বপূর্ণ লিখিত নিদর্শন চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন ইত্যাদি। শব্দের শেষে "অ" ধ্বনির বিলোপ, যৌগিক ক্রিয়ার প্রচলন, ফারসি ভাষার প্রভাব এই সময়ের সাহিত্যে লক্ষ্য করা যায়। কোনো কোনো ভাষাবিদ এই যুগকে আদি ও অন্ত্য এই দুই ভাগে ভাগ করেন।
  3. আধুনিক বাংলা (১৮০০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে-বর্তমান) — এই সময় ক্রিয়াসর্বনামের সংক্ষেপণ ঘটে, যেমন তাহারতার; করিয়াছিলকরেছিল

বাংলার প্রাচীন ভাষাসম্পাদনা

খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম সহস্রাব্দ থেকে বাংলায় হিন্দু ব্রাহ্মণগণ সংস্কৃত ভাষার চর্চা করত, কিন্তু স্থানীয় বৌদ্ধরা প্রাকৃত ভাষার কোন কোন রূপে (ভ্যারাইটি) কথা বলত, যাকে ডঃ সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় উল্লেখ করেছেন মাগধী প্রাকৃতের পূর্ব রূপ বা ভ্যারাইটি হিসেবে। গুপ্ত সাম্রাজ্যের সময়, বাংলা ছিল হিন্দু যাজক বা পুরোহিতদের জন্য সংস্কৃত সাহিত্যের একটি কেন্দ্র, যা স্থানীয়দের কথ্য ভাষাকে প্রভাবিত করে।[২৪] প্রথম সহস্রাব্দে বাংলা যখন মগধ রাজ্যের একটি অংশ ছিল তখন মধ্য ইন্দো-আর্য উপভাষাগুলি বাংলায় প্রভাবশালী ছিল। এই উপভাষাগুলিকে মাগধী প্রাকৃত বলা হয় এবং এটি আধুনিক বিহার, বাংলাআসামে কথিত হত। এই ভাষা থেকে অবশেষে অর্ধ-মাগধী প্রাকৃতের বিকাশ ঘটে।[২৫][২৬] প্রথম সহস্রাব্দের শেষের দিকে অর্ধ-মাগধী থেকে অপভ্রংশের বিকাশ ঘটে।[২৩] সময়ের সাথে সাথে বাংলা ভাষা একটি স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে বিকশিত হয়।[২৭]

বাংলা ভাষার পূর্বপুরুষ হচ্ছে প্রোটো-গৌড়-বাংলা, যা এসেছিল প্রোটো-গৌড়-কামরূপ ভাষা থেকে, সেটি আবার এসেছিল প্রত্ন-মাগধী ভাষা বা মাগধী প্রাকৃত থেকে।[২৮]

প্রাচীন যুগসম্পাদনা

চর্যাপদের একটি পাতা

অন্যান্য পূর্বাঞ্চলীয় ইন্দো-আর্য ভাষাসমূহের মতো বাংলাও সংস্কৃত ও মগধী প্রাকৃত থেকে ১০০০-১২০০ খ্রিষ্টাব্দে বিকশিত হয়।[২৯] সেসময় উপমহাদেশের পূর্বাঞ্চলের স্থানীয় আপভ্রংশ ছিল পূর্ব অপভ্রংশ বা অবহট্‌ঠ ("অর্থহীন ধ্বনি"), সেটা থেকেই অবশেষে আঞ্চলিক উপভাষাসমূহের বিকাশ ঘটে, এক্ষেত্রে তিনটি ভাষাদল গঠিত হয় - বাংলা–অসমীয়া ভাষাসমূহ, বিহারি ভাষাসমূহ এবং ওড়িয়া ভাষাসমূহ। অনেকে যুক্তি দেখান যে, এই ভাষাদলগুলোর পৃথকীকরণ অনেক আগেই ঘটেছে, কেউ কেউ ৫০০ খ্রিষ্টাব্দের কথাও বলেন। অনেকে বলেন, মধ্যযুগে প্রাচীন সাহিত্যসমূহের অনেকগুলোকেই আর পাওয়া যায় না, যার ফলে সেসময়কার অনেক শব্দই আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে।[৩০] কিন্তু ভাষা স্থির ছিল না: সেসময় ভাষার বিভিন্ন রূপ বা ভ্যারাইটির সহাবস্থান ছিল, আর সেসময়ে লেখকগণ প্রায়ই একাধিক উপভাষায় লিখেছিলেন।[৩১] উদাহরণস্বরূপ, ষষ্ঠ শতাব্দীর আশেপাশে অর্ধ-মাগধী থেকে অবহট্‌ঠ ভাষার বিকাশ ঘটেছে বলে ধারণা করা হয়, এই অবহট্‌ঠ ভাষা কিছুসময়ের জন্য বাংলা ভাষার পূর্বপুরুষ প্রোটো-বাংলার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল।[৩১] প্রোটো-বাংলা ছিল পাল সাম্রাজ্য এবং সেন রাজবংশের ভাষা[৩২][৩৩]

চৈতন্য মহাপ্রভুর যুগে ও বাংলার নবজাগরণের সময় বাংলা সাহিত্য সংস্কৃত ভাষা দ্বারা অত্যন্ত প্রভাবিত হয়েছিল।[৩৪] সংস্কৃত থেকে যে সমস্ত শব্দ বাংলা ভাষায় যোগ করা হয়, তাদের উচ্চারণ অন্যান্য বাংলা রীতি মেনে পরিবর্তিত হলেও সংস্কৃত বানান অপরিবর্তিত রাখা হয়।

মধ্যযুগসম্পাদনা

বাংলা সালতানাতের সময়কার রৌপ্যমুদ্রা

বাংলা ভাষার ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতা করেন বাংলার মুসলিম শাসকগোষ্ঠী। ফারসির পাশাপাশি বাংলাও বাংলার সালতানাতের দাফতরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃত ছিল এবং ব্যাপক হারে ব্যবহার হতো। এছাড়াও প্রত্ন বাংলা ছিল পাল এবং সেন সাম্রাজ্যের প্রধান ভাষা।

মধ্য বাংলার লক্ষণসম্পাদনা

মধ্য স্তরের বাংলা ভাষায় দুইটি সুস্পষ্ট উপস্তর দেখা যায়, আদি-মধ্য আর অন্ত্য-মধ্য। আদি-মধ্য বাংলার স্থিতিকাল আনুমানিক ১৩৫০ হতে ১৪৫০ সন পর্যন্ত । চতুর্দশ শতাব্দে ও পঞ্চদশ শতাব্দে লেখা বলে নিশ্চিতভাবে নেওয়া যেতে পারে এমন কোনো রচনা মিলে না। সুতরাং ১৩৫০ হতে ১৪৫০ অবধি শতাব্দ কালের কতটা প্রাচীন বাংলার অন্তর্গত ছিল এবং কতটা আদি-মধ্য বাংলার অন্তর্গত ছিল তা নিশ্চয় করে বলবার উপায় নাই। সব প্রাচীন রচনায় অষ্টাদশ শতাব্দীর নকল করা উচিত এ পাওয়া গিয়েছে। তাই পঞ্চদশ-ষোড়শ শতাব্দের ভাষার পরিপূর্ণ রূপটি এগুলিতে প্রতিফলিত নয়। তবে বড়ু চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের পুথি তেমনি পুরানো না হলেও মূলে হস্তক্ষেপ খুব বেশি না পড়ায় আদি-মধ্য বাংলার পরিচয় খানিকটা পাওয়া যায়।

অন্ত্য-মধ্য বাংলার স্থিতিকাল ১৬০১ হতে ১৮০০ সন পর্যন্ত। মনে রাখতে হবে যে এই কালসীমা অত্যন্ত আনুমানিক। সাধু ভাষার পরিবর্তনের কথা মনে রাখলে অন্ত্য-মধ্য উপস্তরের শেষসীমা ১৭৫০ সন ধরাই সঙ্গত। তবে সেই সঙ্গে সাহিত্যে ব্যবহারের দিকেও লক্ষ রাখলে ১৮০০ সন ধরতে হয়।

আদি-মধ্য বাংলার প্রধান বিশেষত্বসম্পাদনা
  1. আ-কারের পরস্থিত ই-কার ও উ-কার ধ্বনির ক্ষীণতা, এবং পাশাপাশি দুই স্বরধ্বনির স্থিতি। যেমন— বড়াই > বড়া, আউলাইল > আলাল।
  2. মহাপ্রাণ নাসিক্যের মহাপ্রাণতার লোপ অথবা ক্ষীণতা অর্থাৎ ‘হ্ন (ন্‌হ) > ন’, এবং ‘হ্ম (ম্‌হ) > ম’। যেমন— কাহ্ন > কান, আহ্মি > আমি।
  3. [রা] বিভক্তির যোগে সর্বনামের কর্তৃকারকের বহুবচন পদ সৃষ্টি। যেমন— আহ্মারা, তোহ্মারা, তারা।
  4. [-ইল] -অন্ত অতীতের এবং [-ইব] -অন্ত ভবিষ্যতের কতৃবাচ্যে প্রয়োগ। যেমন— “মো শুনিলোঁ” (=আমি শুনিলাম), “মোই করিবোঁ” (=মুই করিব)।
  5. প্রাচীন [-ইঅ-] বিকরণযুক্ত কর্মভাব-বাচ্যের ক্রমশ অপ্রচলন এবং ‘যা’ ও ‘ভূ’ ধাতুর সাহায্যে যৌগিক কর্মভাব-বাচ্যের সামরিক প্রচলন। যেমন— “ততেকে সুঝাল গেল মোর মহাদানে”, “সে কথা কহিল নয়”।
  6. অসমাপিকার সহিত ‘আছ্’ ধাতুর যোগে যৌগিক ক্রিয়াপদ গঠন। যেমন— লইছে < লই + (আ)ছে, রহিলছে < রহিল + (আ)ছে (=রহিয়াছে)।
  7. যথাক্রমে বক্তার প্রাতিমুখ্য ও আভিমুখ্য বুঝাতে ‘গিয়া’ ও ‘সিয়া’ (< এসে) অসমাপিকা ক্রিয়াপদ অনুসর্গরূপে ব্যবহার। যেমন— দেখ গিয়া > দেখ গে, দেখ সিয়া > দেখ সে।
  8. ষোড়শ-মাত্রিক পাদাকুলক-পজ্ঝটিকা হতে চতুর্দশাক্ষর পয়ারের বিকাশ।

আধুনিকসম্পাদনা

ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে নদিয়া অঞ্চলে প্রচলিত পশ্চিম-মধ্য বাংলা কথ্য ভাষার ওপর ভিত্তি করে আধুনিক বাংলা সাহিত্য গড়ে ওঠে। বিভিন্ন আঞ্চলিক কথ্য বাংলা ভাষা ও আধুনিক বাংলা সাহিত্যে ব্যবহৃত ভাষার মধ্যে অনেকখানি পার্থক্য রয়েছে।[৩৫]আধুনিক বাংলা শব্দভাণ্ডারে মাগধী প্রাকৃত, পালি, সংস্কৃত, ফারসি, আরবি ভাষা এবং অস্ট্রো-এশীয় ভাষাসমূহ অন্যান্য ভাষা পরিবারের শব্দ স্থান পেয়েছে।

অষ্টাদশ শতাব্দীর পূর্বে, বাংলা ব্যাকরণ রচনার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ১৭৩৪ থেকে ১৭৪২ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ভাওয়াল জমিদারীতে কর্মরত অবস্থায় পর্তুগিজ খ্রিষ্টান পুরোহিত ও ধর্মপ্রচারক ম্যানুয়েল দ্য আসুম্পসাঁও সর্বপ্রথম ভোকাবোলারিও এম ইডিওমা বেঙ্গালা, এ পোর্তুগুয়েজ ডিভিডিডো এম দুয়াস পার্তেস (পর্তুগিজ: Vocabolario em idioma Bengalla, e Portuguez dividido em duas partes) নামক বাংলা ভাষার অভিধান ও ব্যাকরণ রচনা করেন। [৩৬] ন্যাথানিয়েল ব্র্যাসি হ্যালহেড নামক এক ইংরেজ ব্যাকরণবিদ আ গ্রামার অব দ্য বেঙ্গল ল্যাঙ্গুয়েজ (ইংরেজি: A Grammar of the Bengal Language) নামক গ্রন্থে একটি আধুনিক বাংলা ব্যাকরণ রচনা করেন, যেখানে ছাপাখানার বাংলা হরফ প্রথম ব্যবহৃত হয়। [৩৭] বাঙালি সমাজসংস্কারক রাজা রামমোহন রায়[৩৮] ১৮৩২ খ্রিষ্টাব্দে গ্র্যামার অফ্ দ্য বেঙ্গলি ল্যাঙ্গুয়েজ্ (ইংরেজি: Grammar of the Bengali Language) নামক একটি ব্যাকরণ গ্রন্থ রচনা করেন।[৩৯]

ভাষা আন্দোলনসম্পাদনা

বাংলাদেশসম্পাদনা

শহিদ মিনার

১৯৫১-৫২ সালে পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি জনগণের প্রবল ভাষা সচেতনতার ফলস্বরূপ বাংলা ভাষা আন্দোলন নামক একটি ভাষা আন্দোলন গড়ে ওঠে। এই আন্দোলনে পাকিস্তান সরকারের নিকট বাংলা ভাষার সরকারি স্বীকৃতি দাবি করা হয়। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে ২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বহু ছাত্র ও রাজনৈতিক কর্মী নিহত হন। বাংলাদেশে প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলন দিবস পালিত হয়। ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কো এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা প্রদান করে।

ভারতসম্পাদনা

আসামের শিলচরে শহিদ মিনার

বাংলাদেশ ছাড়াও ১৯৫০-এর দশকে ভারতের বিহার রাজ্যের মানভূম জেলায় বাংলা ভাষা আন্দোলন ঘটে। ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দের ভারতের অসম রাজ্যের বরাক উপত্যকায় একইরকম ভাবে বাংলা ভাষা আন্দোলন সংঘ ভাষা বঙ্গ অঞ্চলের বাঙালি অধিবাসীর মাতৃভাষা। স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ এবং ভারতের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গত্রিপুরা নিয়ে এই অঞ্চল গঠিত। এছাড়া ভারতের অসম রাজ্যের দক্ষিণাংশেও এই ভাষা বহুল প্রচলিত। ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের অধিকাংশ অধিবাসী বাংলা ভাষায় কথা বলে থাকেন।

ভৌগোলিক ভাষাভাষীসম্পাদনা

বিশ্বব্যাপী বাংলা মাতৃভাষী জনসংখ্যা (মোট জনসংখ্যা ২৬৫ মিলিয়ন ধরে)

  বাংলাদেশ (৬১.৩%)
  ভারতের অন্যান্য রাজ্য (৯.২%)
  অন্যান্য (১.৫%)
Bengali-world

বাংলা ভাষা বঙ্গভূমির অধিবাসীদের মাতৃভাষা, যা বর্তমান স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ এবং ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে গঠিত।

লন্ডনের বৃহৎ বাঙালী অভিবাসীদের আবাস ব্রিকলেনে বাংলা ভাষা

মূল অঞ্চলের পাশাপাশি ত্রিপুরা,দক্ষিণ আসাম এবং ভারতীয় সংযুক্ত অঞ্চল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বসবাসরত বাঙালীদেরও মাতৃভাষা বাংলা। ওড়িশা, বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের প্রতিবেশী রাজ্যসমূহের বাংলা ভাষায় কথা বলা হয় এবং দিল্লি, মুম্বাই, বারাণসী এবং বৃন্দাবন সহ বঙ্গের বাইরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় বাংলা ভাষাভাষী রয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্য,[৪০][৪১][৪২] যুক্তরাষ্ট্র,[৪৩] সিঙ্গাপুর [৪৪] মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্য এবং ইতালিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় বাঙালি বসবাস করেন।

সরকারি মর্যাদাসম্পাদনা

ভারতের জাতীয় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম

বাংলাদেশের সংবিধানের ৩নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তথা সরকারি ভাষা বাংলা।[১১] ১৯৮৭ সালের বাংলা ভাষা প্রচলন আইন বাংলাদেশের সকল রাষ্ট্রীয় কাজে বাংলার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে।[২০] বাংলা বাংলাদেশের জাতীয় ভাষা

ভারতে ভারতীয় সংবিধান দ্বারা স্বীকৃত ২৩টি সরকারি ভাষার মধ্যে বাংলা একটি।[৪৫] ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, অসম এবং ত্রিপুরা রাজ্যের সরকারি ভাষা হল বাংলা।[৪৬][৪৭] এছাড়াও বাংলা ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের অন্যতম প্রধান ভাষা।[৪৮][৪৯] ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাস হতে বাংলা ভাষা ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের দ্বিতীয় সরকারি ভাষা রূপে স্বীকৃত। পাকিস্তানের করাচী শহরের দ্বিতীয় সরকারি ভাষা রূপে বাংলাকে গ্রহণ করা হয়েছে। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে সিয়েরা লিওনের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আহমাদ তেজন কাব্বাহ ওই রাষ্ট্রে উপস্থিত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীর ৫,৩০০ বাংলাদেশি সৈনিকের সেবার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা ভাষাকে সরকারি ভাষার মর্যাদা প্রদান করেন।[৫০]

নোবেলজয়ী বাঙালি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দুইটি বাংলা কবিতা বাংলাদেশভারতের জাতীয় সংগীত হিসেবে গৃহীত হয়।[৫১] অধিকন্তু, অনেকে মনে করেন যে, শ্রীলংকার জাতীয় সংগীত (শ্রীলঙ্কা মাতা) মূলত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি বাংলা কবিতার প্রভাবে লেখা হয়েছিল,[৫২][৫৩][৫৪][৫৫] আবার অনেকে এমনটাও মনে করেন যে জাতীয় সঙ্গীতটি প্রথমে বাংলায় রচিত হয়েছিল এবং তারপর তা সিংহলিতে অনুবাদ করা হয়েছিল।[৫৬][৫৭][৫৮][৫৯]

২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশপশ্চিমবঙ্গের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা জাতিসংঘের সরকারি ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষাকে মর্যাদা দেওয়ার দাবী জানান।[৬০]

কথ্য ও সাহিত্যের ভাষার বিবিধতাসম্পাদনা

বাংলার কথ্য ও লেখ্য রূপের মধ্যে বিবিধতা বর্তমান।[৬১][৬২] বিভিন্ন শব্দভাণ্ডার দ্বারা সমৃদ্ধ হয়ে বাংলায় দুই ধরনের লিখনপদ্ধতি তৈরি হয়েছে।[৬৩]

সাধু ভাষাসম্পাদনা

সাধু ভাষা বাংলার এক ধরনের লেখ্য রূপ, যেখানে সংস্কৃতপালি ভাষাসমূহ থেকে উদ্ভূত তৎসম শব্দভাণ্ডার দ্বারা প্রভাবিত অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ ক্রিয়াবিভক্তি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ঊনবিংশ শতাব্দী ও বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে এই ধরনের ভাষা বাংলা সাহিত্যে বহুল ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে সাহিত্যে এই ভাষারূপের ব্যবহার নেই বললেই চলে।

মান্য চলিত ভাষাসম্পাদনা

চলিতভাষা, যা ভাষাবিদদের নিকট মান্য চলিত বাংলা নামে পরিচিত, বাংলার এক ধরনের লেখ্য রূপ, যেখানে মানুষের কথ্য বাগধারা স্থান পায়। এই লিখনশৈলীতে অপেক্ষাকৃত ছোটো আকারের ক্রিয়াবিভক্তি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বর্তমান বাংলা সাহিত্যে এই ধরনের শৈলী অনুসরণ করা হয়ে থাকে। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে প্যারীচাঁদ মিত্রের আলালের ঘরে দুলাল প্রভৃতি রচনাগুলিতে এই ধরনের শৈলী সাহিত্যে জায়গা করে নেয়।[৬৪] এই শৈলী নদিয়া জেলার শান্তিপুর অঞ্চলে প্রচলিত কথ্য উপভাষা থেকে গঠিত হয়েছে, ফলে একে অনেক সময় শান্তিপুরি বাংলা বা নদিয়া উপভাষা বলা হয়ে থাকে।মান্য চলিত বাংলায় অধিকাংশ বাংলা সাহিত্য রচিত হলেও, কথ্য বাংলা ভাষার উপভাষাসমূহ মধ্যে যথেষ্ট বিবিধতা রয়েছে। কলকাতাসহ দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমবঙ্গের অধিবাসীরা মান্য চলিত বাংলায় কথা বলে থাকেন। কিন্তু বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য অঞ্চলগুলির কথ্য ভাষা মান্য চলিত বাংলার থেকে অনেকটাই ভিন্ন। বাংলাদেশের চট্টগ্রামসিলেট অঞ্চলের কথ্য ভাষার সঙ্গে মান্য চলিত বাংলার খুব সামান্যই মিল রয়েছে।[৬৫] তবে অধিকাংশ বাঙালি নিজেদের মধ্যে ভাব আদানপ্রদানের সময় মান্য চলিত বাংলা সহ একাধিক উপভাষায় কথা বলতে সক্ষম বলে মনে করা হলেও অনেক ভাষাবিদ তা স্বীকার করেন না।[৬৬][৬৭]

উপভাষাসম্পাদনা

বঙ্গভূমির (এবং আসামঝাড়খণ্ডের কিছু জেলা) একটি মানচিত্র যাতে বাংলা ভাষার উপভাষা সমূহ দেখানো হয়েছে[৬৮][৬৯] (* দিয়ে শুরু হওয়া মোটা বর্ণের নামগুলোকে কখনো বাংলার উপভাষা আবার কখনো স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে বিবেচনা করা হয়)

কথ্য বাংলাতে আঞ্চলিক প্রকরণ একটি উপভাষার ধারাবাহিকতা গঠন করে। ভাষাতত্ত্ববিদ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় এই উপভাষাগুলি চারটি বৃহৎ ভাগে বিভক্ত করেছেন - রাঢ়ী, বঙ্গ, কামরূপী উপভাষা এবং বরেন্দ্র;[৩৭] তবে অনেক বিকল্প শ্রেণীকরণ প্রকল্পও প্রস্তাব করা হয়েছে।[৭০] দক্ষিণ-পশ্চিমা উপভাষাগুলি (রাঢ়ী বা নদীয়া উপভাষা) আধুনিক মান্য ভাষাগত বাঙালির ভিত্তি তৈরি করে। পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের বেশিরভাগ উপাখ্যানগুলিতে (বাংলাদেশের বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা এবং সিলেট বিভাগ), পশ্চিমবঙ্গে শোনা অনেক যতি ও সুস্পষ্ট ব্যঞ্জনধ্বনিকে উষ্ম ব্যঞ্জনধ্বনি হিসাবে উচ্চারণ করা হয়। পাশ্চাত্য তালব্য-মূর্ধন্য ঘোষ ব্যঞ্জনধ্বনি চ [tɕɔ], [tɕʰɔ], [dʑɔ] যথাক্রমে প্রাচ্যের [tsɔ], [tsʰɔ~sɔ], [dzɔ~zɔ] এর সাথে সম্পর্কিত। বাংলার কিছু উপভাষা বিশেষত চট্টগ্রাম এবং চাকমা ভাষার সুর রয়েছে বৈপরীত্য; বক্তার কণ্ঠের উচ্চারণের তীক্ষ্মতা শব্দগুলোকে পৃথক করতে পারে। খারিয়া থাট এবং মাল পাহাড়িয়া ভাষা পশ্চিমাঞ্চলীয় বাংলা উপভাষার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হলেও সাধারণভাবে তাদেরকে স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে শ্রেণীকরণ করা হয়। উত্তরাঞ্চলীয় বাংলা উপভাষার সঙ্গে সাদৃশ্য থাকা সত্ত্বেও হাজং কে স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। [৭১]

উনবিংশ শতাব্দী এবং বিংশ শতাব্দীর প্রথমদিকে বাংলা ভাষার প্রমিতীকরণের সময় ব্রিটিশ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কলকাতা ছিল বঙ্গভূমির সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। বাংলাদেশের সীমানার পাশে অবস্থিত নদীয়া জেলার পশ্চিম-মধ্য উপভাষার উপর ভিত্তি করে পশ্চিমবঙ্গবাংলাদেশে বর্তমান প্রমিত রূপটি গৃহীত হয়েছে।[৭২] মাতৃভাষা বাংলা হওয়া সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গের একজন বক্তা আদর্শ বাংলায় যে শব্দ ব্যবহার করবেন তা বাংলাদেশের একজন বক্তা ব্যবহার নাও করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ পশ্চিমাঞ্চলে ব্যবহৃত নুন শব্দটির পরিবর্তে পশ্চিমপ্রান্তে লবণ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। [৭৩]

বেশিরভাগ লেখা প্রমিত বাংলায় (এসসিবি) থাকলেও কথ্য উপভাষাগুলি বৈচিত্র‍্য প্রদর্শন করে। কলকাতা সহ দক্ষিণ-পূর্ব পশ্চিমবঙ্গের লোকেরা এসসিবিতে কথা বলে॥ প্রমিত চলিত থেকে কিছুটা স্বল্প পরিবর্তনের সাথে সাথে অন্যান্য উপভাষাগুলি পশ্চিমবঙ্গ এবং পশ্চিম বাংলাদেশের অন্যান্য অংশে যেমন মেদিনীপুরের উপভাষায় কিছু নিজস্ব শব্দ রয়েছে। তবে, বাংলাদেশের বেশিরভাগ লোক উপভাষায় কথা বলেন, এসসিবি থেকে আলাদা কিছু উপভাষা বিশেষত চট্টগ্রাম অঞ্চলের লোকেরা প্রমিত চলিতরূপেই লেখেন [৭৪] চট্টগ্রাম অঞ্চলে উপভাষাটি সাধারণ বাঙালী জনসাধারণের কাছে সহজে বোধগম্য হয় না। [৭৫]

এমনকি এসসিবিতেও বক্তার ধর্ম অনুসারে শব্দভাণ্ডার পৃথক হতে পারে: হিন্দুরা সংস্কৃত থেকে উদ্ভূত শব্দ এবং মুসলমানরা দেশীয় শব্দের পাশাপাশি ফারসি এবং আরবি ভাষার শব্দ ব্যবহার করার সম্ভাবনা বেশি। [৭৪] উদাহরণস্বরূপ:[৭৩]

প্রধানত হিন্দুরা ব্যবহার করেপ্রধানত মুসলিমরা ব্যবহার করে
নমস্কারআসসালামু আলাইকুম
নিমন্ত্রণদাওয়াত
অতিথিমেহমান
জলপানি
স্নানগোসল
মাসীখালা
কাকাচাচা
পিসীফুফু
প্রার্থনাদো'আ/দু'আ
প্রদীপবাতি
নুনলবণ
আধআধা

ধ্বনিব্যবস্থাসম্পাদনা

বাংলা স্বরধ্বনি
সম্মুখকেন্দ্রীয়পশ্চাৎ
সংবৃত~
i
i
~
u
u
সংবৃত-মধ্য
e
e

ʊ~o
u/o
বিবৃত-মধ্যএ্যা/অ্যা
æ
ê

ɔ
ô
বিবৃত
a
a
নাসিক্য স্বরধ্বনি
সম্মুখকেন্দ্রীয়পশ্চাৎ
সংবৃতইঁ~ঈঁ
ĩ
ĩ
উঁ~ঊঁ
ũ
ũ
সংবৃত-মধ্যএঁ

ওঁ
õ
õ
বিবৃত-মধ্যএ্যাঁ/অ্যাঁ
æ̃
অঁ
ɔ̃
বিবৃতআঁ
ã
বাংলা ব্যঞ্জনধ্বনি
 উভয়ৌষ্ঠ্যদন্ত্যদন্তমূলীয়জিহ্বাগ্র্য-
পশ্চাৎ-দন্তমূলীয়
জিহ্ব্য-পশ্চাৎ-দন্তমূলীয়তালব্যকণ্ঠনালীয়
নাসিক্য m  n   ŋ 
স্পর্শঅঘোষ p
1

t̪ʰ
  ʈ
ʈʰ

tʃʰ2
k
 
ঘোষ b

d̪ʱ
  ɖ
ɖʱ
3
dʒʱ
ɡ
ɡʱ
 
উষ্মফ় f1
 
 
 
s2
z3
 
 
, ʃ2
 
 
 
h
 
তরল   l, r4ড়,ঢ় ɽ4   

বাংলা ভাষায় প্রচুর স্বরদ্যোতনা রয়েছে; একই অক্ষরে একাধিক স্বরধ্বনি উচ্চারিত হয়। [৭৬] এর মধ্যে /oi̯/ এবং /ou̯/ দ্বয় কেবলমাত্র একটি করে স্বরবর্ণ এবং দ্বারা লেখা হয়। সর্বমোট যৌগিক স্বরধ্বনির সংখ্যা ১৭ থেকে ৩১ এর মধ্যে রয়েছে বলে অনেকে ধারণা করেন। সরকার (১৯৮৫) কর্তৃক প্রদত্ত একটি লেখ নিচে দেয়া হল:[৭৭]

aae̯ai̯ao̯au̯
ææe̯æo̯
eei̯eu̯
iii̯iu̯
ooe̯oi̯oo̯ou̯
uui̯

শ্বাসাঘাতসম্পাদনা

আদর্শ বাংলায় সাধারণত শুরুতে শ্বাসাঘাত লক্ষ করা যায়। বাংলা শব্দগুলো বিমুর্তভাবে দ্বিপর্ববিশিষ্ট; শব্দের প্রথম অক্ষরে মুখ্য শ্বাসাঘাত পড়ে এবং প্রায়ই বিজোড় অবস্থানের অক্ষরগুলোতে গৌণ শ্বাসাঘাত লক্ষ করা যায়। ফলে সহযোগিতা শব্দটি উচ্চারিত হয় shô-hô-jo-gi-ta "cooperation", যেখানে মোটাদাগ মুখ্য এবং গৌণ শ্বাসাঘাত নির্দেশ করে।

যুক্তব্যঞ্জনসম্পাদনা

স্থানীয় বাংলা ভাষায় শব্দের শুরুতে যুক্তবর্ণ থাকে না;[৭৮] সর্বোচ্চ ব্য-স্ব-ব্য আকারের অক্ষর হতে পারে(স্বরধনির দুপাশে ব্যঞ্জনধ্বনি)। অনেক বাঙালি এমনকি ইংরেজি কিংবা সংস্কৃত থেকে ধারকৃত শব্দ উচ্চারণের ক্ষেত্রেও এই ধারাটি বজায় রাখে যেমন গ্রাম (ব্য-ব্য.ব্য-স্ব-ব্য) উচ্চারণ করেন গেরাম(ব্য-স্ব.ব্য-স্ব-ব্য), স্কুল(ব্য-ব্য-স্ব-ব্য) উচ্চারণ করেন ইস্কুল(স্ব-ব্য.ব্য-স্ব-ব্য) হিসেবে।

বানানতাত্ত্বিক গভীরতাসম্পাদনা

সাধারণভাবে বাংলা লিপির তুলনামূলক বানানতাত্ত্বিক গভীরতা বেশি নয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাঙালীদের ধ্বনি এবং বর্ণের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ রয়েছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে উচ্চারণ-বানান অসঙ্গতি ঘটে।

এক ধরনের অসঙ্গতি হল একই শব্দের জন্য লেখায় বেশ কয়েকটি বানানের উপস্থিতি। ঊনবিংশ শতাব্দীতে কিছু পরিবর্তন হওয়া সত্ত্বেও, বাংলা বানান পদ্ধতি সংস্কৃত ভাষার জন্য ব্যবহৃত বানানরীতির উপর ভিত্তি করেই রচিত হচ্ছে [৩৭] এবং এভাবে কথ্য ভাষায় কিছু শব্দ সংযোজনের বিষয়টি বিবেচনায় থাকে না। উদাহরণস্বরূপ,অঘোষ দন্তমূলীয়-তালব্য ব্যঞ্জন [ɕ]-এর জন্য তিনটি বর্ণ ( , , এবং রয়েছে যদিও বর্ণটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে যেমন স্খলন-এ ব্যবহৃত হয়। তখন অঘোষ দন্তমূলীয় ঊষ্মধ্বনি [s] শব্দ ধরে রাখে; যেমন [skʰɔlɔn] "স্কুল", স্পন্দন [spɔndɔn] ইত্যাদি। বর্ণটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্র যেমন কষ্ট-এ ব্যবহৃত হয়। তখন অঘোষ মূর্ধন্য ঊষ্মধ্বনি [ʂ] শব্দ ধরে রাখে; যেমনঃ কষ্ট [kɔʂʈɔ], গোষ্ঠী [ɡoʂʈʰi] ইত্যাদি। একইভাবে,ঘোষ তালব্য-দন্তমূলীয় ব্যঞ্জনধ্বনি [dʑ] প্রকাশ করার জন্য দুটি অক্ষর রয়েছে ( এবং )। তাছাড়া, আগে উচ্চারিত [ɳ] এবং লিখিত মূর্ধন্য অনুনাসিক কে এখন সাধারণ আলাপচারিতায় দন্তমূলীয় [n] হিসেবে উচ্চারণ করা হয় (যখন উচ্চারণ করা হয় তখন পার্থক্য বোঝা যায়) (যদি না অপর একটি মূর্ধন্যধ্বনির যেমন , এবং -এর সঙ্গে সংযুক্ত থাকে), তবে বানানে এই পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয় না। অর্ধ-সংবৃত সম্মুখ স্বরবর্ণ [æ] বানানতাত্ত্বিকভাবে একাধিক উপায়ে নিরূপিত হয়। উদাহরণস্বরূপ: এত [ætɔ], এ্যাকাডেমী [ækademi], অ্যামিবা [æmiba], দেখা [dækʰa], ব্যস্ত [bæstɔ], ব্যাকরণ [bækɔrɔn]

অন্য ধরনের অসঙ্গতিটি লেখায় যথেষ্ট ঔচ্চারণিক তথ্যের ঘাটতিসম্পর্কিত। পূর্ববর্তী ধ্বনির স্বরসঙ্গতির উপর নির্ভর করে লেখায় প্রতিটি ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে জড়িত অন্তর্নিহিত স্বরবর্ণটি [o] কিংবা [ɔ] হতে পারে; কিন্তু লেখায় স্পষ্টভাবে প্রকাশ না পাওয়ায় তা পাঠকের জন্য দ্ব্যর্থতা তৈরি করে। তাছাড়া অন্তর্নিহিত স্বরটি প্রায়শই শব্দের শেষে ঊহ্য থাকে (যেমন: কম [kɔm]; তবে তা বানানে প্রতিফলিত না হওয়ায় নতুন পাঠকের পক্ষে এটি কঠিন করে তোলে।

অনেক যুক্তব্যঞ্জন তাদের মূল ব্যঞ্জনবর্ণের চেয়ে আলাদা রূপে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ব্যঞ্জনবর্ণের ক্ [k] এবং [ʂ] যুক্ত হয়ে ক্ষ গঠন করে এবং তা [kkʰɔ](রুক্ষ উচ্চারিত হয় [rukkʰɔ]) কিংবা [kkʰo] (ক্ষতি - [kkʰot̪i]) অথবা [kkʰɔ] (যেমন ক্ষমতা এর উচ্চারণ [kkʰɔmɔt̪a]) হিসেবে উচ্চারিত হতে পারে যা কোনও শব্দে যুক্তব্যঞ্জনটির অবস্থানের উপর নির্ভর করে। বাংলা লেখার ব্যবস্থাটি তাই সর্বদা উচ্চারণের সত্যিকারের সহায়ক নয়।

ব্যবহারসমূহসম্পাদনা

বাংলা, অসমীয়া এবং অন্যান্য ভাষার জন্য ব্যবহৃত লিপিটি বাংলা লিপি হিসাবে পরিচিত। বাংলা এবং তার উপভাষায় বাংলা বর্ণমালা হিসেবে এবং কিছু ছোটোখাটো পরিবর্তনের সঙ্গে অসমীয়া ভাষায় অসমীয়া বর্ণমালা হিসেবে পরিচিত। নিকটবর্তী অঞ্চলের অন্যান্য সম্পর্কিত ভাষা যেমন ভারতীয় রাজ্য মণিপুরে মৈতৈ মণিপুরী ভাষাও বাংলা বর্ণমালা ব্যবহার করে, যেখানে মৈতৈ ভাষা বহু শতাব্দী ধরে বাংলা বর্ণমালায় রচিত হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে মৈতৈ লিপি প্রচার করা হয়েছে।

লিখন পদ্ধতিসম্পাদনা

বাংলা হাতের লেখার উদাহরণ হিসেবে নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক ১৯২৬ সালে হাঙ্গেরিতে লেখা একটি বাংলা কবিতার (বাংলা অনুচ্ছেদের নিচে ইংরেজি অনুবাদসহ) অংশবিশেষ

বাংলা লিপি এক ধরনের আবুগিডা, যেখানে ব্যঞ্জনধ্বনির জন্য বর্ণ, স্বরধ্বনির জন্য কারচিহ্ন এবং যদি কোন কার চিহ্ন না থাকে তবে স্বয়ংক্রিয় স্বরবর্ণ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। [৭৯] সমগ্র বাংলাদেশ এবং ভারতের পূর্বাঞ্চলে (আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা) বাংলা বর্ণমালা ব্যবহৃত হয়। আনুমানিক ১০০০ অব্দে ( অথবা ১০ম থেকে ১১শ শতাব্দীতে) ব্রাহ্মী লিপির পরিবর্তিত রূপ থেকে বাংলা বর্ণমালার উদ্ভব হয়েছে বলে মনে করা হয়। [৮০] এক্ষেত্রে লক্ষণীয় যে বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ হওয়া সত্ত্বেও এটি পাকিস্তানে ব্যবহৃত শাহমুখি লিপির মত আরবি ভিত্তিক বর্ণমালার পরিবর্তে বাংলা বর্ণমালা ব্যবহার করে।

বাংলা ভাষায় বক্রলিপিতে নয়টি স্বরধ্বনি এবং দুটি যৌগিক স্বরধ্বনি নির্দেশ করার জন্য ১১ টি প্রতীক বা চিহ্ন এবং ব্যঞ্জনধ্বনি ও অন্যান্য প্রভাবকের জন্য ৩৯ টি প্রতীক ব্যবহৃত হয়। [৮০] এক্ষেত্রে লক্ষণীয় যে বড় হাতের এবং ছোট হাতের বর্ণের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। বর্ণগুলো বাম থেকে ডানে লেখা হয় এবং ফাঁকা স্থান গুলো লিখিত শব্দসমূহ পৃথক করতে ব্যবহৃত হয়। বাংলা লেখায় দুটি বর্ণকে পাশাপাশি যুক্ত করার জন্য একটি সমান্তরাল রেখা টানা হয় যাকে মাত্রা বলা হয়। [৮১]

বাংলা লিপি আবুগিদা হওয়ায় ব্যঞ্জনবর্ণ গুলো সাধারণত উচ্চারণগত ভাষাতত্ত্ব নির্দেশ করে না বরং উহ্যভাবে স্বরধ্বনি ধরে রাখে। ফলে এগুলো প্রকৃতিগতভাবে অক্ষর। উদ্ধৃত্ত স্বরধ্বনি সাধারণত একটি পশ্চাৎ স্বরধ্বনি। কোন রূপ স্বরধ্বনি উচ্চারণ ব্যতীত কোন একটি ব্যঞ্জনধ্বনির উচ্চারণে জোর প্রদান করতে মূল ব্যঞ্জনবর্ণের নিচে হসন্ত () নামক চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। এই চিহ্নটি সব সময় পাওয়া যায় না; তবে যখন উচ্চারণের বৈপরীত্য দেখা যায় তখন এটি ব্যবহৃত হয়।

বাংলা ব্যঞ্জন ধ্বনির চিত্রমূলের আবুগিডা প্রকৃতি সর্বদা সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে না। প্রায়শই ব্যঞ্জনান্ত অক্ষরসমূহে হসন্ত না থাকলেও কোন স্বরধ্বনি উচ্চারিত হয় না।

সহজাত [ɔ] ব্যতীত কিছু স্বরধ্বনির পরে একটি ব্যঞ্জনাত্মক ধ্বনি উপরের, নিচে, আগে, পরে বা ব্যঞ্জনবর্ণের চিহ্নের চারপাশে বিভিন্ন স্বরবর্ণ ব্যবহার করে সর্বব্যাপী ব্যঞ্জনবর্ণ-স্বর লিখনরূপের নিয়ম গঠন করে শব্দস্বরূপাত্মকভাবে উপলব্ধি করা যায়। ‘কারচিহ্ন’ নামে পরিচিত এই শব্দস্বরূপগুলি স্বররূপ এবং এগুলি স্বাধীনভাবে ব্যবহৃত হতে পারে না।

বাংলায় স্বরবর্ণগুলো দুটি রূপ নিতে পারে: লিপির মূল তালিকাতে পাওয়া স্বতন্ত্র রূপ এবং নির্ভরশীল, সংক্ষিপ্তরূপ (উপরে বর্ণিত কারচিহ্ন)। কোনও পূর্ববর্তী বা নিম্নলিখিত ব্যঞ্জনবর্ণ থেকে বিচ্ছিন্নভাবে একটি স্বরকে উপস্থাপন করতে, স্বরবর্ণের স্বতন্ত্র রূপ ব্যবহার করা হয়।অন্তর্নিহিত-স্বর-দমনকারী হসন্তের পাশাপাশি, আরও তিনটি চিহ্ন সাধারণত বাংলাতে ব্যবহৃত হয়। এগুলি হল উর্ধ্বধাবিত চন্দ্রবিন্দু (ঁ) দ্বারা স্বরবর্ণের অনুনাসিক এর অনুপস্থিতিকে বোঝানো হয় (যেমন চাঁদ), পশ্চাদ্ধাবিত অনুস্বার পশ্চাত্তালব্য নাসিক্যধ্বনি (ঙ) ইঙ্গিত করে (যেমন বাংলা; "বাঙলা") এবং পশ্চাদ্ধাবিত বিসর্গ (ঃ) অঘোষ কণ্ঠনালীয় ঊষ্মধ্বনি () (যেমন উঃ! [উঃ]" আউচ! ") বা পরবর্তী ব্যঞ্জনের দ্বিত্ব (যেমন দুখখ [দুকু]" দুঃখ ") ইঙ্গিত করে।

বাংলা যুক্তব্যঞ্জনসমূহ (লিখিত যুক্তব্যঞ্জন) সাধারণত সংযুক্ত হিসাবে লেখা হয়, যেখানে প্রথমে যে ব্যঞ্জনবর্ণ আসে তা পরবর্তীটির উপরে বা বাম দিকে যুক্ত হয়। এই সংযুক্তিতে মাঝেমাঝে মূল রূপের চেয়ে এতটাই বিকৃত হয় যে তাকে আলাদা করে চেনা যায় না। বাংলা লিপিতে, এমন প্রায় ২৮৫টি যুক্তব্যঞ্জন রয়েছে। তবে যুক্তাক্ষর গঠনের কিছু বাহ্যিক নিয়ম থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা ছোটবেলা থেকে রপ্ত করতে হয়।

সম্প্রতি, তরুণ শিক্ষার্থীদের উপর এই বোঝা হ্রাস করার লক্ষ্যে, দুটি মূল বাংলা-ভাষা অঞ্চল (পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশ) এর বহু যুক্তাক্ষরের "অস্পস্ট" আকৃতির সমাধানের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি চেষ্টা করেছে এবং ফলস্বরূপ, আধুনিক বাংলা পাঠ্যপুস্তকে যুক্তবর্ণগুলোর আরও বেশি "স্বচ্ছ" রূপ ধারণ করা শুরু হয়েছে, যেখানে একটি যুক্তাক্ষরের ব্যঞ্জনবর্ণগুলি বাহ্যিক রূপ সহজেই প্রকাশ পায়। তবে, যেহেতু এই পরিবর্তনটি তত বিস্তৃত নয় এবং বাকী বাংলা মুদ্রিত সাহিত্যের মতো একইভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না, তাই আজকের বাংলা-শিক্ষিত বাচ্চাদের সম্ভবত নতুন "স্বচ্ছ" এবং পুরাতন "অস্বচ্ছ" উভয় রূপই চিনতে হবে, যা শেষ পর্যন্ত শেখার বোঝা পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে।

বাংলা বিরামচিহ্ন, "।" (দাড়ি) - একটি ফুলস্টপ এর বাংলা সমতুল্য - যা পশ্চিমা লিপি থেকে গৃহীত হয়েছে এবং ব্যবহারও তাদের অনুরূপ।[৩৭]

নমুনা পাঠ্যসম্পাদনা

বাংলা ভাষায় একটি নমুনা গল্প

নিম্নলিখিত বাংলা ভাষাতে মানবাধিকার সনদের প্রথম ধারার নমুনা পাঠ্য:

বাংলা লিপিতে বাংলা ভাষা

ধারা ১: সমস্ত মানুষ স্বাধীনভাবে সমান মর্যাদা এবং অধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। তাঁদের বিবেক এবং বুদ্ধি আছে; সুতরাং সকলেরই একে অপরের প্রতি ভ্রাতৃত্বসুলভ মনোভাব নিয়ে আচরণ করা উচিত।

বাংলার রোমানীকরণ

Dhara êk: Sômôstô manush sbadhinbhabe sôman môrzada ebông ôdhikar niye jônmôgrôhôn kôre. Tãder bibek ebông buddhi achhe; sutôrang sôkôleri êke ôpôrer prôti bhratritbôsulôbh mônobhab niye achôrôn kôra uchit.

আন্তর্জাতিক ধ্বনিমূলক বর্ণমালাতে বাংলা ভাষার উচ্চারণ

d̪ʱara æk ʃɔmɔst̪ɔ manuʃ ʃad̪ʱinbʱabe ʃɔman mɔrdʒad̪a ebɔŋ ɔd̪ʱikar nie̯e dʒɔnmɔɡrɔhɔn kɔre. t̪ãd̪er bibek ebɔŋ budd̪ʱːi atʃʰe; sut̪ɔraŋ sɔkɔleri æke ɔpɔrer prɔt̪i bʱrat̪rit̪ːɔsulɔbʱ mɔnobʱab nie̯e atʃɔrɔn kɔra utʃit̪.

সম্পর্কিত ভাষাসমূহসম্পাদনা

বাংলা ভাষার সাথে নেপালি ভাষার ৪০ শতাংশ সাদৃশ্য রয়েছে।[৮২] এছাড়া অসমীয়া ভাষা, সাদরি ভাষা প্রায় বাংলার অনুরূপ। অনেকেই অসমীয়াকে বাংলার উপভাষা বা আঞ্চলিক রীতি হিসেবে বিবেচনা করেন। সাঁওতালি ভাষা, বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষার সাথেও বেশ সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। অসমীয়ার পর বাংলার সবথেকে কাছের ভাষা ওড়িয়া

অসমীয়া, চাটগাঁইয়া, সিলেটি এবং প্রমিত বাংলার সাথে তুলনাসম্পাদনা

রাজবংশী অসমীয়াপ্রমিত বাংলাসিলেটিচাটগাঁইয়া
Muĩ kôrûMôi kôrûAmi kôriAmi/Mui xôriãi gôri
Muĩ kôrûsûMôi kôri asûAmi kôrchiAmi/Mui xôriar/xôrramãi gôrir
Muĩ kôrsinûMôi kôrisilûAmi kôrêchiAmi/Mui xôrsilamãi gôrgi
Muĩ kôrûsinûMôi kôri asilûAmi kôrchilamAmi/Mui xôrat aslamãi gôrgilam
Muĩ kôrimMôi kôrimAmi kôrboAmi/Mui xôrmuãi gôirgôm
Muĩ kôrtê thakimMôi kôri/kôrat thakimAmi kôrtê thakboAmi/Mui xôrat tha'xmuãi gorat tàikkôm

আরও দেখুনসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "The Bengalis of Nepal"Peoplegroups.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-২১ 
  2. টেমপ্লেট:E22
  3. "Scheduled Languages in descending order of speaker's strength - 2011" (পিডিএফ)। Registrar General and Census Commissioner of India। ১৪ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০১৮ 
  4. "শিকাগোর অফিস-আদালতে বাংলা | বাংলাদেশ প্রতিদিন"Bangladesh Pratidin। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-২৯ 
  5. প্রতিনিধি, নিউ ইয়র্ক; ডটকম, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর। "শিকাগোর অফিস-আদালতে এলো বাংলা"bangla.bdnews24.com। ২০১৯-১২-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-২৯ 
  6. "শিকাগোর অফিস-আদালতে বাংলা ভাষা"সমকাল। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-২৯ 
  7. হ্যামারস্ট্রোম, হারাল্ড; ফোরকেল, রবার্ট; হাস্পেলম্যাথ, মার্টিন, সম্পাদকগণ (২০১৭)। "Bengali"গ্লোটোলগ ৩.০ (ইংরেজি ভাষায়)। জেনা, জার্মানি: মানব ইতিহাস বিজ্ঞানের জন্য ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট। 
  8. "World Population Clock: 7.8 Billion People (2020) - Worldometer"worldometers.info (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০২-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৩ 
  9. "What are the top 200 most spoken languages?"Ethnologue (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-১০-০৩। ২০১৩-০১-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-০৩ 
  10. "Top 200 most spoken languages"Ethnologue (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-১০-০৩। ২০১৩-০১-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৩ 
  11. "৩৷ রাষ্ট্রভাষা"গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানআইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ সরকার। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২৬ 
  12. "Census of India 2011 - LANGUAGE ATLAS - INDIA" 
  13. "Languages of India"। ২০১৩-১০-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৯-০২ 
  14. "Languages in Descending Order of Strength — India, States and Union Territories – 1991 Census" (পিডিএফ)Census Data Online। Office of the Registrar General, India। পৃষ্ঠা 1। ২০০৭-০৬-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১১-১৯ 
  15. "Bengali language"Encyclopedia Britannica (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৬-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৫-২৩ 
  16. "Bangladesh wants Bangla as an official UN language: Sheikh Hasina"The Times of India। PTI। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 
  17. "General Assembly hears appeal for Bangla to be made an official UN language"UN.org। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১০। ১ জুন ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০২২ 
  18. "Hasina for Bengali as an official UN language"Ummid.com। Indo-Asian News Service। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১০। ২ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০২২ 
  19. বাংলা ভাষায় আরবী ফারসী তুর্কী হিন্দী উর্দু শব্দের অভিধান- কাজী রফিকুল হক, বাংলা একাডেমি,২০০৪,পৃষ্ঠা ১৮
  20. "বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭"আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ২০১৯-০৫-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-২২ 
  21. "Amendment to the Draft Programme and Budget for 2000–2001 (30 C/5)" (পিডিএফ)General Conference, 30th Session, Draft Resolution। UNESCO। ১৯৯৯। ২০১১-০৫-২১ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-২৭ 
  22. "Resolution adopted by the 30th Session of UNESCO's General Conference (1999)"International Mother Language Day। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-২৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  23. (Bhattacharya 2000)
  24. ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "বাংলাদেশ"বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  25. Shah 1998, পৃ. 11
  26. Keith 1998, পৃ. 187
  27. (Bhattacharya 2000)
  28. (Toulmin 2006:306)
  29. "Oberlies, Karl August"Benezit Dictionary of Artists। Oxford University Press। ২০১১-১০-৩১। 
  30. (Sen ও Siddhanta 1996)
  31. বাংলাপিডিয়া (২০১২)। "প্রধান পাতা"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  32. "Pala dynasty – Indian dynasty"Global.britannica.com। ৫ মার্চ ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০১৭ 
  33. nimmi। "Pala Dynasty, Pala Empire, Pala empire in India, Pala School of Sculptures"Indianmirror.com। ২৮ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০১৭ 
  34. Tagore ও Das 1996, পৃ. 222
  35. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১২ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১৬ 
  36. আমীনুর রহমান (২০১২)। "ব্যাকরণ"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  37. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এবং মহাম্মদ দানীউল হক (২০১২)। "বাংলা ভাষা"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  38. Wilson ও Dalton 1982, পৃ. 155
  39. "Rammohan Roy's Goudiya Grammar"Scribd। ২২ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৯ 
  40. "Kuwait restricts recruitment of male Bangladeshi workers | Dhaka Tribune"www.dhakatribune.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৯-০৭। ৩০ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-০৪ 
  41. "Bahrain: Foreign population by country of citizenship, sex and migration status (worker/ family dependent) (selected countries, January 2015) – GLMM"GLMM (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৫-১০-২০। ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-০৪ 
  42. "Saudi Arabia"Ethnologue। ২৩ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-০৪ 
  43. "Archived copy" (পিডিএফ)। ২৭ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  44. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"blls.sg। ২০২২-০৮-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-৩০ 
  45. "Languages of India"। Ethnologue Report। ২০১৩-০২-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১১-০৪ 
  46. Bhattacharjee, Kishalay (এপ্রিল ৩০, ২০০৮)। "It's Indian language vs Indian language"ndtv.com। ২০১৩-০৭-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-২৭ 
  47. NIC, Assam State Centre, Guwahati, Assam। "Language"। Government of Assam। ২০০৬-১২-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৬-২০ 
  48. "Profile: A&N Islands at a Glance"Andaman DistrictNational Informatics Center। ২০১১-১২-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-২৭ 
  49. "Andaman District"Andaman & Nicobar Police। National Informatics Center। ২০০৮-০৬-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-২৭ 
  50. "Sierra Leone makes Bengali official language"। ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০০২ 
  51. "Statement by Hon'ble Foreign Minister on Second Bangladesh-India Track II dialogue at BRAC Centre on 07 August, 2005"। Ministry of Foreign Affairs, Government of Bangladesh। ২০০৮-০৪-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-২৭ 
  52. "Sri Lanka"The World Factbook। ২২ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  53. "Man of the series: Nobel laureate Tagore"The Times of India। Times News Network। ৩ এপ্রিল ২০১১। ১২ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১৯ 
  54. "Sri Lanka I-Day to have anthem in Tamil"The Hindu। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  55. "Tagore's influence on Lankan culture"Hindustan Times। ১২ মে ২০১০। ১১ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  56. Wickramasinghe, Nira (২০০৩)। Dressing the Colonised Body: Politics, Clothing, and Identity in Sri Lanka। Orient Longman। পৃষ্ঠা 26। আইএসবিএন 978-81-250-2479-8। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ 
  57. Wickramasinghe, Kamanthi; Perera, Yoshitha। "Sri Lankan National Anthem: can it be used to narrow the gap?"The Daily Mirror (Sri Lanka) (30 March 2015)। ১১ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  58. Haque, Junaidul (৭ মে ২০১১)। "Rabindranath: He belonged to the world"The Daily Star (Bangladesh)। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  59. Habib, Haroon (১৭ মে ২০১১)। "Celebrating Rabindranath Tagore's legacy"The Hindu। ১৩ জুন ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  60. Subir Bhaumik (২২ ডিসেম্বর ২০০৯)। "Bengali 'should be UN language'"BBC News। ৩ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০১-২৫ 
  61. Das, Debaprasad (২০১৪-১২-১৬)। "Carbon Nanotube and Graphene Nanoribbon Interconnects"ডিওআই:10.1201/b17853 
  62. "Bengali Language At Cornell: Language Information"Department of Asian Studies at Cornell UniversityCornell University। ২০১২-১২-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-২৭ 
  63. মহাম্মদ দানীউল হক (২০১২)। "সাধু ভাষা"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  64. মহাম্মদ দানীউল হক (২০১২)। "আলালের ঘরের দুলাল"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  65. Ray, Hai এবং Ray 1966, পৃ. 89
  66. "SSRN Electronic Library"papers.ssrn.com। ২২ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৯ 
  67. "Indian Linguistic Nation State: A Report"Scribd। ২২ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৯ 
  68. বাংলা ভাষা ও উপভাষা, সুকুমার সেন, আনন্দ পাবলিশার্স [Bangla language and dialect, Sukumar Sen, Anand Publishers]। 
  69. The Origin and Development of the Bengali language, Suniti kumar Chatterjee, Vol 1, Page 140, George Allen and Unwin London,New Edition,1970 (English ভাষায়)। 
  70. আবুল কালাম মনজুর মোরশেদ (২০১২)। "উপভাষা"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  71. "Hajong"। The Ethnologue Report। ১৫ নভেম্বর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১১-১৯ 
  72. মহাম্মদ দানীউল হক (২০১২)। "চলিত ভাষা"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  73. "বাংলার ইতিহাস"। বাংলার টেলিযোগাযোগ এবং ইলেকট্রিক কোম্পানি। ৭ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০০৬ 
  74. Ray, Hai এবং Ray 1966
  75. Ray, S Kumar। "The Bengali Language and Translation"Translation Articles। Kwintessential। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০০৬ 
  76. (Masica 1991, পৃ. 116)
  77. Sarkar, Pabitra (১৯৮৫)। Bangla diswar dhoni। Bhasa। 
  78. (Masica 1991, পৃ. 125)
  79. Escudero Pascual Alberto (২৩ অক্টোবর ২০০৫)। "Writing Systems/ Scripts" (পিডিএফ)Primer to Localization of Software। it46.se। ১৯ মার্চ ২০০৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০০৬ 
  80. আবদুল মমিন চৌধুরী (২০১২)। "বাঙ্গালাহ"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  81. "banglasemantics.net"। ২৪ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  82. "Bengali"Ethnologue। ১০ এপ্রিল ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 

আরও পড়ুনসম্পাদনা

বহিঃসংযোগসম্পাদনা

🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগবদরের যুদ্ধআনন্দবাজার পত্রিকাবাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসআর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলইসলামবাংলাদেশব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দলদোয়া কুনুতফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলা ভাষাআবহাওয়াআর্জেন্টিনাআর্জেন্টিনা–ব্রাজিল ফুটবল প্রতিদ্বন্দ্বিতাশেখ মুজিবুর রহমানমিয়া খলিফাকোস্টা রিকা জাতীয় ফুটবল দলরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুম্বই ইন্ডিয়ান্সবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহযাকাতলিওনেল মেসিফিতরামুহাম্মাদইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনকুরআনের সূরাসমূহের তালিকাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলক্লিওপেট্রাচেক প্রজাতন্ত্রইউটিউবকাজী নজরুল ইসলামদোলযাত্রাআসসালামু আলাইকুমবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাশিয়া ইসলামচেন্নাই সুপার কিংসকুরআনবিকাশআয়াতুল কুরসিমৌলিক পদার্থের তালিকাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধছয় দফা আন্দোলনশাকিব খানসানরাইজার্স হায়দ্রাবাদভুটানসৌদি আরবআল্লাহর ৯৯টি নাম২০২৪ কোপা আমেরিকাবিশ্ব থিয়েটার দিবসবাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের তালিকাপহেলা বৈশাখসেজদার আয়াতভারতপদ্মা সেতুদৈনিক প্রথম আলোঢাকা মেট্রোরেলভূমি পরিমাপশেখ হাসিনাবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহওয়ালাইকুমুস-সালামভৌগোলিক নির্দেশকবদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবাদের তালিকাযৌনসঙ্গমবাংলাদেশী টাকাইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিকম্পিউটারহজ্জটুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকের রেকর্ড তালিকাবাংলা বাগধারার তালিকানেপোলিয়ন বোনাপার্টবাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকাবিভিন্ন দেশের মুদ্রাটেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাবাংলা ভাষা আন্দোলন২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব২৭ মার্চজনি সিন্সবাংলাদেশের জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২সাহাবিদের তালিকাঅকাল বীর্যপাত২০২৩ট্রাভিস হেডন্যাটোমুহাম্মাদের স্ত্রীগণলিঙ্গ উত্থান ত্রুটিমাইকেল মধুসূদন দত্তজানাজার নামাজব্রাজিলমহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলবসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রডুগংমুস্তাফিজুর রহমানবাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীপশ্চিমবঙ্গফরাসি বিপ্লব